বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বৃহস্পতিবার, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের কারেকশন করার প্রবণতা বজায় ছিল। যুক্তরাষ্ট্রে থ্যাংকসগিভিং ডে উদযাপনের কারণে সারা দিনে এই পেয়ারের মূল্যের ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতার মাত্রা খুবই কম ছিল। আজকেও আমরা মূল্যের মাঝারি মাত্রার মুভমেন্টের খুব কম সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি। তবুও, ধীরগতিতে ইউরো মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট বজায় রয়েছে, যা আমাদের প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে, কারেকশন সাধারণত এক বা দুই দিনের বেশি সময় ধরে হয়। দুই মাসের দরপতনের পরে, এক মাস বা তারও বেশি সময় ধরে এই পেয়ারের মূল্যের কারেকশন হতে পারে। এই সময়ে, মূল্য ওঠানামা করতে পারে, বিশেষ করে নতুন ট্রেডারদের জন্য এই পরিস্থিতি বিভ্রান্তিকর হতে পারে। এছাড়াও, কারেকশন সাধারণত প্রবণতাভিত্তিক মুভমেন্টের তুলনায় ধীর গতিতে হয়। এই সপ্তাহে মার্কেটে শক্তিশালী মুভমেন্ট সৃষ্টি করার মতো কোনো উল্লেখযোগ্য ইভেন্টও ছিল না।
বৃহস্পতিবার জার্মানিতে অপেক্ষাকৃত গুরুত্বপূর্ণ মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল, এই প্রতিবেদনের ফলাফল ইউরোর মূল্যকে সামান্য ঊর্ধ্বমুখী করেছে। তবে, মার্কেটে ইতোমধ্যেই ছুটির মেজাজ বিরাজ করছিল।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে, বৃহস্পতিবার 1.0526 লেভেলের কাছাকাছি একটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। তবে, এই পেয়ারের মূল্যের দৈনিক ভোলাটিলিটি মাত্র ৪০ পয়েন্ট ছিল। যদিও সিগন্যালটি যথাযথ এবং কার্যকর ছিল, তবে মার্কেটে ট্রেডিং কার্যক্রম কম ছিল। তবুও, নতুন ট্রেডাররা একটি লং পজিশন ওপেন করতে পারত, যা থেকে আনুমানিক ১০–২০ পয়েন্ট লাভ করা যেত।
শুক্রবারে কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের কারেকশনের প্রচেষ্টা চলমান আছে। তবে, ইউরোর মূল্যের কেবলমাত্র সীমিত এবং ধীরগতির ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের প্রত্যাশা করা যেতে পারে। আগামী কয়েক দিন ধরে এই পেয়ারের মূল্যের পুলব্যাক অব্যাহত থাকতে পারে। সাপ্তাহিক টাইমফ্রেমে, এই পেয়ারের মূল্য সাইডওয়ে চ্যানেলের নিম্ন সীমানার লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছেছে। তবে, এটি এই পেয়ারের মূল্যের নতুন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরুর নিশ্চয়তা প্রদান করছে না।
আমরা মনে করি যে, শুক্রবার এই পেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। তবে, আজ তেমন গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক প্রতিবেদন প্রকাশ না হওয়ার প্রেক্ষাপটে, বৃহস্পতিবারের মতো আরেকবার সীমাবদ্ধ রেঞ্জের মধ্যে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হল: 1.0269–1.0277, 1.0334–1.0359, 1.0433–1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726–1.0733, 1.0797–1.0804, 1.0845–1.0851, 1.0888–1.0896। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রে কোনো বড় ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নে মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। এই প্রতিবেদনটি ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংকের ভবিষ্যৎ পদক্ষেপের পূর্বাভাস নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। যদি মুদ্রাস্ফীতি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি বৃদ্ধি পায়, তাহলে ইউরোর মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
- সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
- লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
- MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
- গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। প্রচলিত প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেটে থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের জন্য পরামর্শ
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।