empty
 
 

মুদ্রা হচ্ছে পণ্য-দ্রব্যের দাম পরিমাপের জন্য জাতীয় সরকার অথবা কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক চালু করা লেনদেনের একটি মাধ্যম। বিভিন্ন দেশের মুদ্রা এর স্বাভাবিক মান বজায় রাখার জন্য তারল্য অথবা ক্ষমতায় পার্থক্য হয়।


মুদ্রাকে বিভিন্নভাবে শ্রেণীবিভাগ করা যায়। যেকোন বৈশিষ্ট্যই এই শ্রেণীবিভাগের ভিত্তি হতে পারে, উদাহরনস্বরুপ:


ইস্যুকৃত মুদ্রা:


- জাতীয় মুদ্রা হচ্ছে দেশের অভ্যান্তরে ব্যবহারের জন্য সরকার কিংবা কেন্দীয় ব্যাংক দ্বারা ইস্যুকৃত মুদ্রা;

- বৈদেশিক মুদ্রা হচ্ছে একটি প্রচলনের মুদ্রার নোট (ব্যাংক নোট, মূল্যবান সম্পদ, কয়েন), নির্দিষ্ট বিদেশি রাষ্ট্রের অথবা রাষ্ট্রের গ্রুপের বৈধ্য বিনিময় উপকরন, এবং প্রচলন থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে আথবা প্রত্যাহারিত হচ্ছে, কিন্তু বিনিময়যোগ্য মুদ্রা নোট।;

- বিদেশি রাষ্ট্রের আর্থিক একক এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক এবং হিসাব প্রদান এককের হোল্ডিং;

- সমষ্টিগত মুদ্রা হচ্ছে এমন মুদ্রা যা আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলোর মধ্যে নিষ্পত্তির জন্য ব্যবহার করা হয়, যেমন, এসডিআর। পূর্বের ইউরোপিয়ান মুদ্রা - ইসিইউ, এখন - ইউরো।


মুদ্রা বিনিময়যোগ্যতা:


- সম্পূর্ণ বিনিময়যোগ্য মুদ্রা।এটা এমন একধরনের মুদ্রা যার অন্তর্ভূক্ত কার্যক্রমের কোন সীমাবদ্ধতা নেই।;

- আংশিক বিনিময়যোগ্য মুদ্রা হচ্ছে এমন মুদ্রা যার অন্যান্য মুদ্রায় পরিবর্তনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু সীমাবদ্ধতা আছে।;

- বিনিময় অযোগ্য মুদ্রা


বিনিময় হার:


- শক্তিশালী/ স্থিতিস্থাপক মুদ্রা ( সাধারন হারে এবং অন্যান্য মুদ্রার ক্ষেত্রে স্থিতিস্থাপক);

- দুর্বল/ নমনীয় মুদ্রা


মেয়াদকাল:


- ধ্রুব মুদ্রা ( একটি বিনিময় হার যা বিনিময় হারের অস্থিরতা দূর করতে এবং আর্থিক কর্মক্ষমতা পরিসখ্যান হিসাবের জন্য ব্যবহার করা হয়);

- সাময়িক মুদ্রা। এটা কোন নির্দিষ্ট দেশের মুদ্রা এবং এর মেয়াদকাল সীমিত। এটা একটি আর্থিক একক যা চুক্তির মেয়াদ থাকাকালীন সময়ে চুক্তির অন্তর্ভূক্ত বিনিময়ের জন্য ব্যবহার করা হয়।)


কার্যকারিতা:


- রিজার্ভ মুদ্রা হচ্ছে এমন মুদ্রা যা কেন্দ্রীয় ব্যাংক জমিয়ে রাখে এবং সংরক্ষন করে বৈদেশিক বানিজ্যের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এবং বৈদেশিক বিনিযোগের জন্য।;

- প্রধান মুদ্রাসমূহ। সম্পূর্ণ বিনিময়যোগ্য সাতটি প্রধান মুদ্রা রয়েছে যেগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশী ব্যবহৃত হয়: ইউএস ডলার, ইউরো, সুইস ফ্রাঙ্ক, পাউন্ড, জাপানি ইয়েন, কানাডিয়ান ডলার, অষ্ট্রেলিয়ান ডলার


বাস্তব অস্তিত্ব:


- বাস্তব মুদ্রা সরাসরি অর্থ হিসেবে কাজ করে;

- প্রায়- মুদ্রা, যেমন, ইসিইউ


মুদ্রার কার্যাবলি:


- আর্থিক একক হিসেবে পণ্য-দ্রব্য ও সেবার মূল্য নির্দেশ করে;

- বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে মধ্যবর্তী ভূমিকা পালন করে, যা এই সূত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করা যায়: পণ্য- অর্থ- পণ্য;

- সঞ্চয় এবং আহরণের উপায় হিসাবে। এটা আর্থিক একক থেকে স্থাবর সম্পদ (সম্পত্তি) এককে অথবা অর্থপত্রে ( স্টক, বন্ড ইত্যাদি) পরিবর্তিত হতে পারে।


মুদ্রার সঙ্গা, শ্রেণীবিভাগ এবং কার্যাবলি থেকে আমরা এই উপসংহারে পৌছাতে পারি যে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন মুদ্রার মান বিনিময় হারে নির্দেশিত হয়।


বিনিময় হার হচ্ছে কোন দেশের আর্থিক এককের মূল্য (কোট) যা অন্য দেশের আর্থিক একক, মূল্যবান ধাতু অথবা অর্থপত্রের বিপরীতে প্রকাশ করা হয়।


নিচের বিষয়গুলোর কারনে বিনিময় হার সর্বদা পরিবর্তনশীল:


- বিনিময় হারে ক্রয় ক্ষমতার সামঞ্জস্য। এটা দ্বারা বুঝায় কোন মার্কেটে কোন নির্দিষ্ট পরিমান জিনিসের ক্রয়ক্ষমতা অন্য মার্কেটে একই পরিমান হওয়া উচিত। যদি ঐ নির্দিষ্ট পরিমানকে চলমান হারে বিদেশী কোন মুদ্রায় পরিবর্তন করা হয়, বিদেশের তুলনায় ঐ পণ্যের দাম বা দেশীয় উৎপাদন খরচ যত বেশী হবে, আমদানির পরিমান রপ্তানির তুলনায় বেশী হবে। এটা সম্ভবত বিদেশের একই পণ্যের তুলনায় স্থানীয় মূল্য বাড়িয়ে দিবে. এবং এটা বিদেশি মুদ্রার দাম বাড়িয়ে দিবে কারন এর চাহিদা বাড়বে।;

- মূলধন প্রবাহ। বিদেশি অর্থপত্র, ব্যাংক ক্রেডিট এবং ক্যাশের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে বিদেশি মুদ্রার দাম বৃদ্ধি পাবে।;

- বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম যার মুদ্রাগুলো বাজারে কোট করা হয়। কোন দেশের অর্থনীতির খারাপ অথবা ভাল অবস্থার খবর যা মুদ্রার হারকে প্রভাবিত করে।;

- বড় আর্থিক তহবিলগুলোর কার্যক্রম। তারা মুদ্রা মজুত এর উপর বিনীয়োগের মাধ্যমে বিনিময় হারের দীর্ঘমেয়াদী প্রবনতার উপর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে।;

- আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকের কার্যক্রম। আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকের বৈদেশিক বানিজ্যের কার্যক্রম মুদ্রা বাজারের মোট কার্যক্রমের তুলনায় নগন্য হওয়ার কারনে বাজারে তাদের প্রভাব স্বপ্লমেয়াদী এবং তারা বিশ্বব্যপী মুদ্রার হারের পরিবর্তন করতে পারে না।;

- রিপোর্ট, মিটিং, সম্মেলন, প্রেস কনফারেন্স ইত্যাদি চলাকালীন সময় রাজনৈতিক বক্তব্য বিনিময় হারকে প্রভাবিত করতে পারে (উদাহরনস্বরুপ, সুদের হার সম্পর্কিত আলোচনার পরে প্রেস কনফারেন্স), এবং বক্তব্য দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কিত হলে তারা কথনও কখনও দীর্ঘমেয়াদী প্রবনতা নির্ধারন করতে পারে(যেমন, সুদের হার পরিবর্তনের সম্ভাবনা, সরকারি বাজেট তৈরি)। যেহেতু এসব বক্তব্যের সময় এবং তারিখ আগে থেকেই জানা যায়, তাই বক্তব্যে কি বলা হতে পারে এবং মার্কেট এর পর কেমন আচরন করবে তার পূবার্ভাস সাধারনত এসব বক্তব্যে আগেই আবির্ভূত হয়। মাঝে মাঝে অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে এবং এসব ঘটনা বাজারকে শক্তিশালী অনিশ্চিত গতিবিধিতে নিয়ে যায়।;

- কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যক্রম। সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে মুদ্রা বাজারে প্রভাব বিস্তার করতে পারে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রা বাজারে প্রবেশ করে বানিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে। সরকার উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ানোর জন্য প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ প্রবিধান ব্যবহার করতে পারে। প্রত্যক্ষ প্রবিধানের অন্তর্ভূক্ত রয়েছে ডিসকাউন্ট নীতি এবং বাহিরের মুদ্রা বাজারে মুদ্রা বিনিয়োগ। (যা আন্তর্জাতিক বাজারে হঠাৎ করে বিশাল অংকের মুদ্রা অন্তর্ভূক্তি বা প্রত্যাহারের সাথে সম্পর্কিত); পরোক্ষ প্রবিধান দেওয়া হয় সার্কুলেশনের মধ্যে টাকার পরিমান, মুদ্রাস্ফীতির হার এবং অন্যান্য বিষয়সমূহের উপর ভিত্তি করে। মার্কেটে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রবেশের পর সাধারনত বিনিময় হারের লক্ষনীয় পরিবর্তন হয়, কারন বিশাল অংকের বিনিয়োগ। বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মিলে মুদ্রা বাজারে যৌথ অভিজান পরিচালনা করতে পারে।


প্রবন্ধের তালিকায় ফিরুন।
অ্যাকাউন্ট খুলুন
অ্যাকাউন্ট খুলুন
ডিপোজিট করুন
ডিপোজিট করুন
এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.
Widget callback